কে তোমার ঈশ্বর?
যখন তুমি বিপদে পড়ে কান্না করছিলে তখন তোমাকে কেও সাহায্য করতে আসে নি। এমনকি তোমার ঈশ্বর ও না। তুমিই নিজের তোমাকে অজান্তে সাহায্য করেছিলে। এ কথা শুনে মনে হবে লেখক বড় নাস্তিক। কিন্তু বিশ্বাস করো আমি ঈশ্বরের অস্তিত্বে চরম বিশ্বাসী। আমি এতটাই আস্তিক যে আমি ঈশ্বর ব্যতীত আমার চারপাশে আর কিছুই দেখতে পাই না।
যখন তুমি বিপদে পড়ে কান্না করতে করতে বালিশ ভিজিয়েছো, তুমি হয়তো ভেবেছো কেও তা দেখে নি। কিন্তু বিশ্বাস করো সেদিন স্বয়ং ঈশ্বর তোমার মাথায় হাত রেখেছিলেন। সেটা ও ঈশ্বর ছিলেন না সেটা তুমিই ছিলে।
তুমি বিপদে পড়ে চিৎকার করে ডাকলে যে তোমাকে সাহায্য করে সেটাই তোমার ঈশ্বর। সেটা ঈশ্বর নয় সেটা তুমিই যে তোমাকে সাহায্য করেছো।
আমি এখানে বলতে চাই নি যে ঈশ্বর তোমাকে সাহায্য করে না। আমি বলতে চাচ্ছি তুমি যে ঈশ্বর কি চেনো সেটা সে ঈশ্বর নয় তবে তিনিই প্রকৃত ঈশ্বর।
আমার কথার অর্থ হচ্চে তুমি যে ঈশ্বরের উপাসনা করছো ইটের তৈরি মন্দির আর মসজিদের মাঝে সে ঈশ্বর মূলত ঈশ্বর নয়। তুমি যে মসজিদ, মন্দির কিংবা গির্জাকে ঈশ্বরের ঘর বলছো সেটা কখনোই ঈশ্বরের ঘর নয়। তুমি ঈশ্বরের নাম দিয়ে মন্দির, মসজিদ কিংবা চার্চ তৈরির জন্য যে টাকা উঠাও তা কি প্রমাণ করে না যে তোমার ঈশ্বর অসহায়। কিংবা তুমি ব্যতীত তোমার ঈশ্বরের কোনো অস্তিত্বই নেই? ঈশ্বরের ঘর তৈরির জন্য যদি তোমাদের টাকা সংগ্রহ করতে হয় তাহলে একবার ভাবো তো। তোমার ঈশ্বর তুমি ব্যতীত কতটা অসহায়।
কোনো একজন দার্শনিক বলেছেন যে ঈশ্বর মারা গেছেন এবং তোমরাই ঈশ্বরকে মেরে ফেলেছো। আমি তো বলবো তিনি ঠিকই বলেছেন। তোমরাই তোমাদের ঈশ্বরকে মেরে ফেলেছো তোমাদের কর্মকাণ্ড দারা। তোমার ঈশ্বরকে নামাতে নামাতে কতটা নিচে নামিয়ে ফেলেছো একবার কি ভেবে দেখেছো?
তাই আমি বলছি তুমি যে ঈশ্বরের ইবাদত করো সে ঈশ্বর তোমাকে সাহায্য করতে পারে না। আর তোমরা সে ঈশ্বরের ইবাদত করো যে ঈশ্বর নিজের ঘর ও নিজে বানানোর ক্ষমতা রাখে না। তাহলে সে ঈশ্বর তোমাকে বিপদে সাহায্য করে এটা কি অযৌক্তিক নয়?
প্রথমে আমি বলেছিলাম তুমি যখন বিপদে পড়ো তখন তোমাকে ঈশ্বর সাহায্য করে না বরং সেটা তুমিই। হ্যাঁ তুমি যে ঈশ্বরকে চেনো সে তোমাকে সাহায্য করে না, তোমাকে সাহায্য করে প্রকৃত ঈশ্বর যে ঈশ্বর যে কোনো মন্দির মসজিদ কিংবা চার্চ এ থাকেন না।
যুগে যুগে মহামানবগণ যে ঈশ্বরের সন্ধান দিয়ে গেছেন সে ঈশ্বর তোমাকে সাহায্য করে। তুমি তাকে ডাকো বা না ডাকো তাতে তাঁর কিছুই আসে যায় না। তিনি তোমার ইবাদত কিংবা সেজদা গ্রহণের জন্য বসে নেই।
আমি বলেছিলাম যে তোমাকে ঈশ্বর আর তুমি সাহায্য করো। হ্যাঁ আমি বলছি তুমি আর ঈশ্বর তোমাকে সাহায্য করো। তুমি এ কথার অর্থ সেদিন বুজতে পারবে যেদিন তুমি চরমে অবগাহন করবে। তুমি চরমে গিয়ে যখন দেখবে এখানে আলাদা কেউ নেই তখন তুমি বুঝবে কে তোমাকে সাহায্য করে। তুমি দেখবে তুমি আর স্রষ্টা আলাদা কেউ নন। আলাদা হতেই পারে না।
তুমি কি শোনো নি মুনসর হাল্লাজ বলেছিলেন আমিই সত্য। তুমি কি শোনো নি বায়েজিদ বোস্তামী বলেছিলাম সকল প্রশংসা আমার। তুমি কি ঋষিদের কন্ঠে শোনো নি যে তাঁরা বলে গিয়েছেন ওহম ভ্রম্মাষ্মী অর্থাৎ আমিই ব্রক্ষ্মা। তাঁদের এ কথার অর্থ যেদিন জানবে সেদিন বুজবে তুমি কে? কে তোমাকে সাহায্য করে? কে বিপদে তোমার মাথায় হাত রাখে?
আমি অতি নগণ্য এক ভিক্ষুক তোমাকে একটি পথের সন্ধান দিতে চাই। আর সেটি হলো তুমি কোরআনের সূরা ইখলাস কে পর্যবেক্ষণ করো। তুমি “আহাদ” শব্দটিকে ভেঙে চুরে দেখো কিছু পেলে ও পেতে পারো। তুমি তুমি সুরা কাফ এর ১৬ নাম্বার আয়াত কে ভেঙে চুরে দেখো কিছু পেলে ও পেতে পারো। তুমি সুরা কাওসার কে ভেঙে চুরে তালাশ করে দেখো কে বা কারা কাওসার দান করেন তাহলে কিঞ্চিৎ সত্যের সন্ধান তুমি পেলে ও পেতে পারো।
আমি অধমের লেখার ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ভুলত্রুটির জন্য মালিকের কদমে দয়া ভিক্ষা চাই। সত্যের জয় হোক।
– AR Junayed Hasan Shuvo






