তোমরা নিজেরা মুক্ত হও, স্বাধীন হতে চেষ্টা করো।
তোমরা নিজেরা মুক্ত হও, স্বাধীন হতে চেষ্টা করো। কারণ মুক্ত বা স্বাধীন ব্যাক্তিকে’ই ধার্মিক বলা যেতে পারে৷ মনে রাখবে, ঠুনকো ধার্মিক মোল্লা পুরোহিতদের অনুসরণ করে তোমরা কখনো’ই স্বাধীন হতে পারবেনা৷ এদের কাছে মুক্ত হওয়া বা স্বাধীন হওয়া বলতে কিছু নেই, কারণ এদের কাছে রয়েছে পরকালের স্বর্গ-নরক বা জান্নাত-জাহান্নাম। তাঁরা তোমাদের জীবনের গতিবিধি আলাদা করতে পছন্দ করেন, হিন্দু,মুসলিম,ইয়াহুদী,খ্রিষ্টান,উপাধি দিয়ে থাকেন। এরা তোমাদের এক সৃষ্টিকর্তাকে আলাদা করেছেন ঈশ্বর, আল্লাহ, ভগবান নামকরণে। এবং এখানে’ই শুরু হয় তোমাদের বিভাজন, ওরা তোমাদেরকে একতাবদ্ধ ভাবে দেখতে চায় না।
মোল্লা পুরোহিতরা তোমাদের ঈশ্বরকে খুব নোংরা স্থানে দাঁড় করিয়েছেন, তাঁরা তোমাদের ঈশ্বরকে হিংস্র বানিয়েছেন, তাঁরা তোমাদের ঈশ্বরকে অন্ধ ও বোকা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন৷ তোমাদের ঈশ্বর দয়াবান, তোমারা এ কথাটি ভুলে যেতে বাধ্য হও নরক বা জাহান্নামের ভয়ে৷ মূলত ঈশ্বর এত ভয়ংকর নয় যেভাবে মোল্লা পুরোহিতরা উপস্থাপন করে থাকেন। ঈশ্বর কোনো কালে’ই তোমাদের সাথে শত্রুতা করেনি৷ এবং তোমরাও কখনো ঈশ্বরের শত্রু ছিলেনা যে-ঈশ্বর এত ভয়ংকর হয়ে তোমাদের উপর কোনো প্রতিশোধ নিবেন৷
ঈশ্বর তোমাদেরকে কোনো লোভী হিসেবেও দেখতে চায়নি, তিনি তোমদেরকে ভয় ও লোভ এসবের উর্ধ্বে গিয়ে প্রেমে দেখতে চেয়েছেন৷ কাজে’ই মোল্লা পুরোহিতদের বলা ভবিষ্যৎ স্বর্গ-জান্নাত লোভ হতে বেরিয়ে আসো। এবং ভবিষ্যৎ নরক-জাহান্নামের ভয়কেও দূর করে বর্তমানে আসো, স্বাধীন হও, নিজেদেরকে মুক্ত করো৷ মনে রাখবে, ঈশ্বরের স্বর্গ-নরক, জান্নাত-জাহান্নাম এখানে’ই এবং এখানে’ই যন্ত্রণার শুরু ও তার সমাপ্তি, এখানে’ই সুখের শুরু এবং এখানে’ই তার সমাপ্তি। আর কোথাও কোনো স্বর্গ-নরক, জান্নাত-জাহান্নাম নেই।
মোল্লা পুরোহিতদের কাল্পনিক কথা ফেলে দাও৷ নিজেদেরকে সম্পূর্ণ মুক্ত করো, স্বাধীন হয়ে যাও, বর্তমানকে উপভোগ করার চেষ্টা করো৷ মুক্ত হওয়া মানে, নিজেদেরকে সম্পূর্ণ একটি নবজাতকে রূপান্তর করা,নবজাতকের যেমন কোনো জড়তা থাকেনা, তোমরাও ঠিক তেমন হয়ে যাও। নবজাতকের ভিতরে যেমন কোনো স্বর্গ লোভ কাজ করেনা, এবং থাকেনা কোনো নরক ভয়, তোমরাও ঠিক তেমন হয়ে যেতে চেষ্টা করো।
নবজাতকদের পরিক্ষা করে দেখতে পারো, তোমাদের দেখা সবচেয়ে ভয়ংকর জিনিস’টি তুমি নবজাতকের সামনে দিয়ে দেখো, ঐ নবজাতক তোমাদের দেখা ভয়ংকর জিনিস’টি নিয়ে’ই খেলা করবেন। কারণ সে সর্বদা’ই স্বাধীন প্রেমপূর্ণ, তার কোনো ভয় কাজ করেনা। তোমরাও তেমন মুক্ত হও, নিজেদেরকে নবজাতকে রূপান্তর ঘটাও, দেখবে তোমরাও নরক-জাহান্নাম নিয়ে খেলা করতে পারবে, স্বর্গ-জান্নাত, নরক-জাহান্নাম এসকল কিছু’ই বর্তমান, তোমরা কোথায় বাস করবে তা সম্পূর্ণ তোমাদের উপর নির্ভর করে,ভবিষ্যতের আশায় বর্তমানকে ছেড়ে দিওনা৷
লেখা: বুদ্ধ মুহাম্মদ কৃষ্ণ