গরীবে নেওয়াজ উপাধী লাভের ঘটনা
একবার বড়পীর গাউসুল আজম আব্দুল কাদির জিলানী (রাঃ) খাজা বাবাকে বললেন- হে মঈনউদ্দিন আল্লাহপাক আমাকে বলেছেন যে ব্যাক্তি আজকে আমার পিছনে ফজরের নামায পড়বে সে বিনা হিসাবে জান্নাতবাসী হবে, তাই তোমাকে আমি এই সু-সংবাদ দিলাম, তুমি সকাল সকাল কাউকে না বলে আমার পিছনে নামাজে দাড়িয়ে যেও, তবে সাবধান তুমি যদি এই কথা আর কাউকে বলো তাহলে তুমি নিজেই জাহান্নামী হয়ে যাবে।
খাজা বাবা নিজের কথা চিন্তা না করে এলাকার সকল গ্রামে গ্রামে গিয়ে মুসলমান ভাইদেরকে এই সুবর্ণ সুযোগ জানিয়ে দিলেন। ফলে বড় পীর যখন ফজরের নামায শেষে সালাম ফিরালেন তখন দেখতে পেলেন তার পিছনে লক্ষ লক্ষ মানুষ কিন্তু খাজা বাবা নাই।
তখন বড় পীর খাজা বাবাকে ডেকে এনে বললেন- হে খাজা তুমি তো জাহান্নামী হয়ে গেলে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে, তুমি কেন এই কাজ করলে। তুমি কি জাহান্নামকে একটুও ভয় করো না? উত্তরে খাজা বাবা বললেন- হুজুর আমার নবীর লক্ষ লক্ষ উম্মত যদি আমার উসিলায় জান্নাতে যেতে পারে তাহলে আমি খাজা একা হাসি মুখে জাহান্নামে যেতে প্রস্তুত।
খাজা বাবার ভক্তের এত মহব্বত দেখে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে সাথে সাথে আল্লাহর দরবারে মুনাজাত করলেন- ইয়া বারে ইলাহি আপনি খাজাকে ওয়াদা ভঙ্গ করার অপরাধকে ক্ষমা করে দিন, আর সেই সাথে বিশ্বের ঘরে ঘরে খাজার শান মান আরও বুলন্দ করে দিন। আল্লাহপাক সাথে সাথে তা কবুল ও মঞ্জুর করে নেন এবং খাজা বাবার প্রতি খুশি হয়ে তার মর্যাদা আরও বাড়িয়ে দেন।
সেইদিন খাজা বাবার উসিলায় এলাকার লক্ষ লক্ষ মুসলমান বিনা হিসাবে জান্নাতবাসি হয়ে গিয়েছিল খাজা বাবার এই মহান ত্যাগ দেখে বড় পীর তাকে গরীবের বন্ধু ‘গরীবে নেওয়াজ’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তখন থেকে খাজা বাবার নাম হয়ে যায় গরিবে নেওয়াজ খাজা মঈন উদ্দিন চিশতী (রাঃ)।
গ্রন্থসূত্রঃ- ‘খুৎবাতে আজমির’, পৃষ্ঠা-২৪৭।