গুরু কি শুধুই পথ প্রদর্শক নাকি এর থেকে ও বেশি কিছু?

গুরু কি শুধুই পথ প্রদর্শক নাকি এর থেকে ও বেশি কিছু?

সাধনার জগতে গুরু কেনো প্রয়োজন? এ প্রশ্নটির পরিপূর্ণ উত্তর আজ পর্যন্ত আমি কাও কে দিতে শুনি নি। কেও কেও জানে কিন্তু মোল্লাদের ফতুয়ায় জর্জরিত হওয়ার ভয়ে সম্পূর্ণ বলে।

আমি পর্যন্ত শুনে আসছি সবাই বলে গুরু প্রয়োজন কারণ গুরু পথ দেখাবেন তিনি পথ প্রদর্শক। এটা সত্য কথা। তবে এর থেকে ও যে চরম কিছু সত্য আছে সেটা কেও প্রকাশ করে না।

গুরু পথ দেখান এটা সবাই বলে কিন্তু গুরু যে “পার করানে ওয়ালা” এটা কেউই বলে না। দুনিয়ার কোনো সাধকের যোগ্যতা নেই সাধনার একটি ধাপ পার করার। এমনকি আমি সম্পূর্ণ জোর দিয়ে ও বলতে পারি আজ পর্যন্ত কোনো সাধক সাধনার একটি ধাপ ও নিজ সাধনার বলে অতিক্রম করে নি। গুরু তো সেই ব্যক্তি যিনি সাধকের দিকে দয়ার নজরে তাকিয়ে তাকে পার করে দেন। যদি গুরু তা না করতেন তাহলে কেউই আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছতে পারতো না। শয়তানকে যথেষ্ট ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যাতে সে কোনো মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে পারে। যথেষ্ট বললে হয়তো বা ভুল হবে খানিকটা সর্বোচ্চ বলা যেতে পারে। আর সাধকগণ নিজের সকল রিপুকে বস করে বসে আছেন ! সেটা কিভাবে? উত্তর গুরুর দয়ায়।

কাম কে নিয়ন্ত্রণ করা কি এতই সহজ? আমি বলবো কামকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা তো মানুষের নেই। শুধুমাত্র গুরু দয়া করে কাম সাগর পার করে দেন বলেই মানুষ কাম মুক্ত হতে পারে। তা না হলে মানব সূচনালগ্নের এই আদি পাপ থেকে কখনোই সাধক মুক্তি পেতো না।

গুরু যদি দয়া না করতো তাহলে কখনোই সাধক নিজেকে অহংকারমুক্ত করতে পারতো না। যেখানে লক্ষ কোটি বছর ইবাদত করা আজাজিল অহংকারকে ছাড়তে পারলো না, আর সেখানে ৬০ বা ৭০ বছর ইবাদত করে মানুষ অহংকারমুক্ত হয় যাবে? এতই সহজ! সাধক যখন করুন শুরে সাহায্য ভিক্ষা চায় তখন আর কোনো কামেল মোর্শেদ তাঁর ভক্তকে ক্ষমা না করে থাকতে পারে না। কারণ আল্লাহর অলীগণ খোদার জাত। খোদার সকল গুণ তার অলিগনের মাঝে ও বিদ্যমান। তাইতো তিনি রহমান নাম ধরে দয়া করে সকলকে পার করে দেন।

আমি বলতে চাই গুরু যদি শুধুই পথ প্রদর্শক হতো তাহলে কখনোই আল্লাহকে পাওয়া সম্ভব হতো না। গুরু পথ দেখান সত্য তবে তিনি পথ প্রদর্শক থেকে অনেক বেশি কিছু। অনেক বেশি যেটা বর্ণনা করার যোগ্যতা আমি অধম কাঙালের নেই।

গুরু সেই যিনি আপনাকে আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছে দেন। গুরু সেই যিনি আপনাকে ক্ষমা পাওয়ানোর জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান যেমনটা রাসূল সাঃ ইয়া উম্মতি ইয়া উম্মতি বলে কান্না করতেন। গুরু তিনি মুরিদের বিপদ নিজের ঘাড়ে নেন। গুরু তিনি, যিনি আপনি বিপদে পড়ে বাবা বলে ডাক দিলে এক সেকেন্ড ও স্থির থাকতে পারেন না।

গুরু সেই ব্যক্তি, মুরিদ সাগরে পড়ে বাবা বলে ডাক দিলে যিনি মুরিদকে সাগর থেকে এক সেকেন্ডে বরই গাছের নিচে এনে ফেলতে পারেন।

গুরু সেই ব্যক্তি, মুরিদ যখন জঙ্গলে বাঘের কবলে পড়ে বাবা বলে চিতকার করে ডাক দেয় তখন ওযু করার ঘটা হাজার মাইল দূরে ভাগের মাথায় ছুঁড়ে মমেরে মুরিদকে উদ্ধার করতে পারেন।

গুরু সেই ব্যক্তি, কোন মুরিদ দরবারের সিঁড়িতে বসে কি নালিশ দিয়ে গেলেন সেই নালিশ ও তিনি শোনেন , যিনি ভক্তের রুহ কবজ করতে আসা আজরাইল কে ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা রাখেন তিনিই মোর্শেদ, তিনিই গুরু, তিনিই।

আমি গোলামের লেখায় কোনো ভুলত্রুটি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা চাই।

অবশেষে বলতে চাই- “দুনিয়ার কোনো সাধকের যোগ্যতা নেই আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছানোর। তাই তো তিনি যুগে যুগে নূরে মোহাম্মদী রূপে আগমন করেন। আর নূরে মোহাম্মদী রহমান নাম ধরে অধমদের পার করে দেন।”

AR Junayed Hasan Shuvo
আরো পড়ুনঃ