পূজার মহত্ত্ব শুধু মূর্তি পূজাতেই সীমাবদ্ধ নয়।
দুর্গা পূজা হিন্দু ধর্মের একটি বড় ধর্মীয় উৎসব। এ পূজার মহত্ত্ব শুধু মূর্তি পূজাতেই সীমাবদ্ধ নয়। আনুষ্ঠানিক মূর্তি পূজার পেছনে লুকিয়ে আছে দুর্গা পূজার আসল উদ্দেশ্য। কিন্তু আফসোস আমাদের হিন্দু সম্প্রদায় আনুষ্ঠানিকতায় এতটাই মগ্ন যে তাঁরা মূলকেই হারিয়ে ফেলতে বসেছে।
দেবী দুর্গার আবির্ভাবের প্রেক্ষাপট টা ছিলো এরকম যে যখন পৃথিবীতে অসুর শক্তির রাজত্ব চলছিলো ঠিক তখন দেবী দুর্গার আগমন ঘটে। তিনি মহিষাসুর নামক এক অসুর কে বধ করেন।
প্রথমেই বলে রাখি যা আছে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে তা আছে মানব ভান্ডে। এখানে বোঝানো হয়েছে অসুর শক্তির বিনাশ করে যে শক্তি সেটি হলো দেবী দুর্গার শক্তি বা ঐশ্বরিক শক্তি।
এখানে যে মহিষাসুর নামক অসুরের কথা বলা হয়েছে সে অসুর মূলত আমাদের ছয়টি রিপু। এই ষড় রিপু হলো আমাদের ভেতরকার অসুর শক্তি বা মহিষাসুর। এই মহিষাসুর কে বিনাশ করতে পারে দেবী শক্তি বা পরমাত্মার শক্তি। এ শক্তি বাইরে কোথাও নয় বরং লুকিয়ে আছে আমাদের ভেতরেই।
যখন আমরা এই দেবী শক্তিকে আমাদের ভেতরে জাগ্রত করতে পারবো তখনই আমাদের ভেতরে ছয়টি রিপু (লোভ, কাম, ক্রোদ, মদ, মোহ, মাৎসর্জ) বিনাশ হবে। অর্থাৎ আমরা অসুর মুক্ত হবো।
আর মূর্তি বিসর্জন দেওয়া হয় বিজয়া দশমীর দিনে। এ দিনে দেবী দুর্গা অসুরের বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন। তবে এখানে যে মূর্তি বিসর্জন দেয়ার কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে আমাদের ভেতরে রিপু গুলোর মূর্তি। যেমন কামের মূর্তি লোভের অহংকারের মূর্তি……..।
আর যখন আমরা আমাদের ভেতরে বিজয়া দশমী ঘটাতে পারবো ঠিক তখনই আমরা অসুর মুক্ত হবো তথা মুমিন বা ঈমানদার হবো।
দুর্গা পূজা শুধু কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের জন্য নয় বরং সমগ্র মানব জাতির জন্য মুক্তির এক পথ। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে যে নিজের ভেতরে দেবী শক্তিকে জাগ্রত করতে পারবে সেই মুক্তি লাভ করবে। এখানে কোনো ধর্মের দেওয়াল নেই।
অতি সংক্ষেপে দুর্গা পূজা নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করলাম। ভুলত্রুটির জন্য পাঠকদের কাছে ক্ষমা ছেয়ে নিচ্ছি। sufibad24.com এর সাথে যুক্ত থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
– AR Junayed Hasan