তুমিই কেবল তোমার রক্ষাকর্তা।
বুদ্ধ বললেন-
“নিজের ত্রুটির দিকে তাকাও,
তুমি কী করেছো বা করো নি,
অন্যের ত্রুটি এড়িয়ে যাও।”
অর্থাৎ, তোমরা কেবল আত্মকেন্দ্রিক হও, অপরের দোষ খুঁজতে যেওনা। কারণ অপরের দোষ খুঁজে দেখতে গিয়ে তোমরা তোমাদের দোষ খুঁজে দেখার সময় পাবেনা, যখন’ই তোমরা অপরের দিকে তাকাবে ঠিক তখন’ই তোমরা তোমাদেরকে দেখার কথা ভুলে যাবে। অপরের ত্রুটি দেখতে চাওয়া মানে’ই হচ্ছে নিজেকে এড়িয়ে যাওয়া৷ তোমরা তোমাদের ত্রুটি নিয়ে ভাবো এবং দোষ মুক্ত হও, এক’ই দোষ দ্বিতীয় বার যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখো, এতে তোমরা রক্ষা পাবে।
“একটা সুন্দর ফুল যেমন উজ্জ্বল কিন্তু ঘ্রাণহীন, সুন্দর কথাও তেমন অর্থহীন যখন মানুষ যা বলে তা করে না।”
অর্থাৎ, পণ্ডিতজনার মতন ধর্মকথা খুব চমৎকার ভাবে ঘুছিয়ে বলতে পারাটা বড় বিষয় নয়, বরং বড় বিষয় হচ্ছে এই যে তোমরা যা বলছো তার সব কিছু’ই কী তোমার মাঝে বিদ্যমান? সর্বত্র ঘুরে ঘুরে শান্তির উপদেশ দিচ্ছো কিন্তু দিন শেষে তোমরা’ই দ্বন্দ্বের মূল কারণ নয়তো?
তাই তোমরা যে বার্তা দিচ্ছো তা তোমাদের মাঝে বিদ্যমান ঘটাও, না হয় ঘ্রাণহীন ফুলের মতন তোমাদের উপদেশও অর্থহীন হয়ে যাবে৷ তোমরা যখন পণ্ডিত না হয়ে প্রজ্ঞাবান হবে তখন তোমরা জীবিত ফুলের ন্যায় সৌরভ ছড়াবে।
“মধুকর ফুল থেকে মধু সঞ্চয় করে,
ফুলের ঘ্রাণ বা রুপ গ্রহণ না করে।
সাধুও তেমন থির হয়ে লোকালয়ে বিচরণ করেন।”
এখানে “মধুকর ফুল থেকে মধু সঞ্চয় করে,
ফুলের ঘ্রাণ বা রুপ গ্রহণ না করে”
অর্থাৎ, যারা স্বাধীন-মুক্ত মানুষ তাঁরা কখনো উশৃঙ্খল ভাবে জীবনযাপন করেন না, মানুষকে অতিষ্ঠ করে দিবেন না, তাদের বেঁচে থাকার দরুন অপরের ক্ষতিসাধন হবেনা। তাঁরাও দুনিয়াতে থাকেন, তোমরাও দুনিয়াতে থাকো, কিন্তু তোমাদের দ্বারা দুনিয়া দোষ যুক্ত হয়ে যায়, কিন্তু তাদের দ্বারা দুনিয়া দোষ মুক্ত হয়।
“সাধুও তেমন থির হয়ে লোকালয়ে বিচরণ করেন।” অর্থাৎ, সাধুরা কোমল রূপি হয়, তথা নিজ কেন্দ্রস্থিত একজন মুক্ত অনুসন্ধানকারী।
লেখা: বুদ্ধ মুহাম্মদ কৃষ্ণ