সাধকেরা যে শক্তিতে পরিণত হন

সাধকেরা যে শক্তিতে পরিণত হন

শক্তির এই অনন্ত সম্ভাবনাময়তা, যা একদিকে বিজ্ঞানী দ্বারা আবিষ্কৃত হয় এবং অন্যদিকে মহাজন রূপী সাধকেরা সেই শক্তির শাশ্বত প্রয়োগে পরিণত হন, তা এক স্বতন্ত্র অন্তর্দৃষ্টি তৈরি করে। একটি সামান্য বৈশিষ্ট্য দিয়ে যদি বলা হয়, তবে এই শক্তি বিজ্ঞানী দ্বারা বিশ্লেষিত হয় এবং সেই বিশ্লেষণ হয়তো বাহ্যিক পৃথিবীকে আঘাত করে, দৃশ্যমান বাস্তবতাকে বদলে দেয়; কিন্তু মহাজন রূপী সাধকেরা সে শক্তি কখনো বাহ্যিক নয়, তা তার অন্তরীণ সত্ত্বার সাথে জড়িয়ে যায়, যেখানে শক্তি অমোঘভাবে অন্তরের গভীরে বিকশিত হতে থাকে।

মহাজনেরা কখনো বাহ্যিক সাধনাতে আটকে থাকেন না, তাদের জন্য শারীরিক সাধনা একটি মাধ্যম মাত্র। তাদের আসল সাধনা অন্তরের দিগন্তে, যেখানে কোনো বিভাজন নেই, যেখানে একমাত্র সত্ত্বার অভ্যন্তরীণ শক্তির প্রকাশ ঘটে। এই অভ্যন্তরীণ শক্তি ব্যবহারের প্রতিটি পদ্ধতি একজন সাধককে আরো গভীরে, আরো একীভূতভাবে ঐ এক শাশ্বত শক্তির সাথে জড়িয়ে দেয়। শক্তির এই অভ্যন্তরীণ প্রকাশ, যা মহাজনরা ধারণ করেন, তা পৃথিবীর বৃহত্তর রহস্যের অন্বেষণে মগ্ন হতে থাকে, যেখানে সকল বিভাজন মুছে যায় এবং এক অমোঘ সত্ত্বার পরিচয় মিলতে থাকে।

শক্তির এই গভীর রহস্য যে কেবল বাহ্যিকতার মধ্য দিয়ে বুঝা যায় না, তা আমরা দেখতে পাই এক বিশাল আধ্যাত্মিক বাস্তবতায়। বিজ্ঞানী যেমন দৃশ্যমান শক্তির ব্যবহারিক প্রক্রিয়ায় নিজের পথ তৈরি করে, ঠিক তেমনই মহাজনরা সেই শক্তির অভ্যন্তরীণ অভিব্যক্তিকে বোধ করতে পারেন। এভাবে, পৃথিবী ও আকাশের মাঝখানে, মানুষের অস্তিত্বের মধ্যে তাদের ধর্ম, দর্শন ও আধ্যাত্মিকতাকে যুক্ত করে একটি সংহত, অতুলনীয় শক্তির উৎস তৈরি হয়।

এমন এক শক্তি, যা প্রমাণিত না হলেও অনুভবযোগ্য, যা কোন সময়েই স্থিতিশীল নয়, বরং প্রবাহিত, পরিবর্তিত এবং মহাসমুদ্রের মত অন্তহীন। সেই শক্তির যোগান প্রাপ্তি, তা শুধু বাহ্যিক বিজ্ঞান দিয়ে নয়, সঠিক আধ্যাত্মিক সাধনাই তাকে প্রকাশ্যে আনে। মহাজনরা, যোগী সাধকেরা এই শক্তির ধারক হয়ে পৃথিবীকে আধ্যাত্মিক জ্ঞানে আলোকিত করেন, তাদের আত্মসাক্ষাৎ হয়ে ওঠে সেই জ্ঞানের মধ্যবর্তী রূপ।

এই শক্তির প্রতি গভীর উপলব্ধি, যে শক্তি একান্তভাবে আমাদের সত্ত্বায় নিবদ্ধ থাকে, সেটাই আধ্যাত্মিকতার শ্রেষ্ঠতম উদ্দেশ্য।

—ফরহাদ ইবনে রেহান

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel