নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ভবন- ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক প্রেরণা।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা মহানগরীতে অবস্থিত স্বাধীনতার প্রেরণা, বিপ্লবীদের অক্সিজেন, স্মারক ভবন ও গবেষণা কেন্দ্র হল নেতাজি ভবন। এই ভবনে অমর ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের মহানেতা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বৈপ্লবিক জীবন ও কর্মধারা নিয়ে আলোচনা, চর্চা, গবেষণা অব্যাহত আছে।
১৯০৯ সালে নেতাজির বাবা জানকীনাথ বসু এই বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। বর্তমানে “নেতাজি রিসার্চ ব্যুরো” এই ঐতিহ্যবাহী ভবনটির স্বত্বধারী। এই ভবনে একটি জাদুঘর, মহাফেজখানা এবং একটি পাঠাগার দৃশ্যমান।

এই জাদুঘরে নেতাজির ব্যক্তিগত সামগ্রী:- তাঁর পোশাক, জুতো, স্যুটকেস, খাট এবং বিভিন্ন ব্যবহারিক দ্রব্য।
ঐতিহাসিক নথি, ছবি:- তাঁর কলকাতার ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে বৃটিশ বিরোধী সংগ্ৰামের কাজকর্মের নানা ছবি ও নথি সংরক্ষিত আছে।
১৯৪১ সালে নেতাজির অন্তর্ধানের সময় যে গাড়িটি ব্যবহার করেছিলেন, সেটিও এই জাদুঘরে আছে। আজাদ হিন্দ ফৌজের বিভিন্ন ফটো ও নথিপত্র মজুত আছে। উল্লেখ্য, জাদুঘরের প্রথম তলায় নেতাজির বাবা জানকীনাথ বসুর ব্যক্তিগত আসবাবপত্রও প্রদর্শিত হয়। প্রথমে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ভাইপো শিশিরকুমার বসুর পত্নী কৃষ্ণা বসু ও পরে পুত্র সুগত বসু “নেতাজি রিসার্চ ব্যুরো” চালনা করেন।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর অঞ্চলে লালা লাজপত রায় রোডে (এলগিন) এই বাড়িটি অবস্থিত। প্রতি সোমবার ভবনটি বন্ধ থাকে। টিকিট-৫০ টাকা। উল্লেখ্য, ভবানীপুর অঞ্চলের কলকাতা মেট্রো স্টেশনটির নাম এই ভবনের নাম অনুযায়ী”নেতাজি ভবন মেট্রো স্টেশন” নামকরণ করা হয়েছে। প্রকাশ থাকে যে, ১৯৪১ সালে ব্রিটিশ সরকার-কর্তৃক গৃহবন্দী অবস্থায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এই বাসভবন থেকে বার্লিনে পলায়ন করেন।

১৯৪৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পর গান্ধীজি ও জওহরলাল নেহেরু নেতাজি ভবন পরিদর্শনে এসেছিলেন। ১৯৫৭ সালে নেতাজি ভবন জাদুঘরটির জন্ম হয়। এই জাদুঘরে নেতাজির পায়ের ছাপ সংরক্ষিত আছে। ২০০৭ সালে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এই ভবন পরিদর্শন করেন।
– মুহাম্মদ নাসেরউদ্দিন আব্বাসী