অদৃশ্যের দীপ্তি ও আত্মার নির্বাক বেদনা
কোনো শাস্ত্রে নেই সেই প্রথম উচ্চারণের রূপ, যেখানে শব্দ জন্মেছিল, অথচ মুখ ছিল না। যেখানে প্রেম জন্ম নিয়েছিল, অথচ স্পর্শ ছিল না। এই তো সেই স্থান, যেখানে স্রষ্টা আত্মাকে প্রথম চুম্বন করেছিলেন— না কোনো আদেশে, না কোনো নিয়মে, শুধু নিঃশর্ত বিসর্জনে।
তুমি আমাকে বলো— সেই প্রেমের ভাষা কী?
যে প্রেমে ঈশ্বর নিজেকে ভেঙে টুকরো করে বিলিয়ে দিলেন প্রতিটি প্রাণে, যে প্রেমে জন্ম নেয়া হ’ল বিভক্তি, আর সেই বিভক্তির প্রতিটি রেখায় তিনি নিজেরই মুখ আঁকলেন।
এই প্রেম কোনো সম্প্রদায়িক ধর্মের পরিচয় বহন করে না, বরং ধর্ম নিজেই প্রেমের কাছে নতজানু হয়ে আছে — অন্ধ কোনো ভক্তির চেয়ে এই প্রেম অনেক বেশি দুর্দান্ত, যেখানে ভক্ত আর প্রভুর মাঝের রেখাও বিলীন।
আমরা সেই প্রেমের সন্তান, যাদের জন্ম অস্তিত্বের প্রান্তসীমায়— যেখানে ‘আমি’ শব্দটি ভেঙে যায়, আর ‘তুমি’ শব্দটি গলে যায় সত্তার আলোয়।
এই যে নৈঃশব্দ্যের ভিতর দাঁড়িয়ে আছি আমরা, এখানেই প্রেম— এখানেই স্রষ্টা— এখানেই মুক্তি, এবং এখানে কোনো শাস্ত্রের প্রয়োজন হয় না।
শুধু আত্মজিজ্ঞাসার দীপ্তিতে নিজেকে পোড়াও— দেখবে, ঈশ্বর নয়, তুমি নিজেই ঈশ্বরের অনুরূপ। ভাগ্য নয়, তুমি নিজেই নিজের সৃষ্টি।
লেখা- ফরহাদ ইবনে রেহান