নারীর দেহে কোন খানে আবে হায়াতের পানি আছে?
অমৃত জিজ্ঞাসা (পর্ব-০৪)
প্রশ্নঃ নারীর দেহে কোন খানে আবে হায়াতের পানি আছে? সেই পানি কখন আসে? পানির রং কি?
উত্তরঃ
প্রথমে হল আবে হায়াত কি? এটা কি শুধু নারীর মাঝেই আছে নাকি পুরুষের মাঝেও বিদ্যমান? এই দুটি প্রশ্নের উত্তর না জেনে আবে হায়াতের অবস্থান ও রঙ বোধগম্য হবে না কখনোই। আবে হায়াতের পানি নিয়ে দু’রকমের ব্যাখ্যা হয়, একটি হল ভ্রান্ত মতবাদী ভ্রান্ত সাধকদের মতামত, যারা কি না সাধনার সাথে যৌনতাকে জড়িয়ে ফেলেছে এবং যৌনতাকেই সাধনা হিসেবে প্রচার করছে। আরেকটি হল সূফীবাদ তথা সত্য দর্শন। আমি সংক্ষেপে উভয় মতবাদ থেকেই আলোচনার চেষ্টা করব।
‘আবে হায়াত’ অর্থ হলো ‘সঞ্জীবনী সুধা বা জল’। অর্থাৎ যে জল পান করলে জীব আর মৃত্যু বরণ করবে না; বরং অমর হয়ে যাবে। কথিত আছে যে খিজির (আঃ) এই জল পান করেই অমর হয়ে আছেন এখনও। জান্নাত বাসী প্রতিটি মানুষকেই এই আবে হায়াতের পানি পান করানো হবে।
ভ্রান্তমতে এই আবে হায়াতের জল বলা হয়ে থাকে নারীর দেহ হতে নির্গত এক প্রকার তরল পদার্থকে। যা কি না একটা নির্দিষ্ট স্থানে বিদ্যমান এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ে উৎপন্ন হয়। তা হল মাতৃদুগ্ধ। প্রতিটি মানবই জন্মের পর মাতৃদুগ্ধ পান করে থাকে। দুর্বল শিশু মাতৃদুগ্ধ পানে সবল হয়ে উঠে। কেউ কেউ আবার অন্য তরল পদার্থকেও আবে হায়াত বলে থাকে। কেউ কেউ ভাবে আবে হায়াতের রং ‘সফেত (সাদা)’, কেউ ভাবে ‘লাল’, কেউ ভাবে ‘জরদ (হলুদ)’, কেউ ভাবে ‘ছিয়া (কালো)’। অর্থাৎ আবে হায়াত নিয়েই এই ভ্রান্ত মতবাদীদের মধ্যে মতানৈক্য আছে বেশ কিছু কারনে। তবে তারা সকলে এই বিষয়ে একমত যে নারীর কাছেই আবে হায়াত, পুরুষের কাছে আবে হায়াতের জল নেই। সুতরাং আবে হায়াতের অবস্থান, নির্গত হওয়ার সময়সীমা ও রং সম্পর্কে আমার কিছু বলার দরকার নেই এখন।
এখন কথা হল কোনো তরল পদার্থ পান করে কি সত্যিই অমর হওয়া যায়??? আপনার বিবেকের কাছেই প্রশ্ন করুন। নারীরা কি তবে আবে হায়াত পান করবে না?? নাকি এটা শুধু পুরুষের জন্যেই??
আবে হায়াত সম্পর্কে সঠিক তথ্য এই যে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিটি মানবের মাঝেই আবে হায়াত বিদ্যমান। কারন প্রতিটি সৃষ্টিই নারী। প্রতিটি মানবের মাঝে আবে হায়াত বিদ্যমান। প্রকৃত সাধকগণ সেই আবে হায়াত পান করে অমরত্ব লাভ করে আছেন এই ধরাধামে। দেহের মাঝেই আবে হায়াতের পানি। কিন্তু সবাই চিনতে পারে না, আবার অনেকে চিনতে পারলেও পান করার উপযুক্ত করে তুলতে পারেন না নিজেকে।
আবে হায়াত সম্পর্কে এর বেশি বলা অনুচিত হবে। এটা এক মহাতত্ত্ব, যা সম্পূর্নই গুরুমুখী বিদ্যা। আমি ভ্রান্ত মতটাকে ধরিয়ে দিলাম যাতে কেউ ভুল পথে না যান।
বিঃদ্রঃ এই পর্বের প্রশ্নটা করেছিলেন Mainuddin Ratan ভাই।
লেখাঃ DM Rahat