হোমপেজ ইলমে মারেফত সূরা ফাতিহার মর্মকথা।

সূরা ফাতিহার মর্মকথা।

সূরা ফাতিহার মর্মকথা।

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন শরীফ বলেন,

সূরা আল ফাতিহা (الفاتحة), আয়াত: ৬ ও ৭
اِہۡدِنَا الصِّرَاطَ الۡمُسۡتَقِیۡمَ ۙ
صِرَاطَ الَّذِیۡنَ اَنۡعَمۡتَ عَلَیۡہِمۡ ۙ۬ غَیۡرِ الۡمَغۡضُوۡبِ عَلَیۡہِمۡ وَلَا الضَّآلِّیۡنَ ٪

উচ্চারণঃ ইহদিনাসসিরা-তাল মুছতাকীম। সিরা-তাল্লাযীনা আন‘আমতা ‘আলাইহিম। গাইরিল মাগদূ বি ‘আলাইহিম ওয়ালাদ্দাল্লীন।

অর্থঃ “আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।”

এখানে সহজ-সরল পথ বলতে আল্লাহ কি বুঝিয়েছেন? সেই সমস্ত লোক কারা, যারা আল্লাহর নেয়ামত প্রাপ্ত। আবার পক্ষান্তরে সেই সমস্ত লোক কারা, যারা আল্লাহর গজবে পতিত এবং পথভ্রষ্ট হয়েছে। একবারও কি কখনো শুদ্ধ বিবেক দিয়ে ভেবে দেখেছেন ভাই? নাকি জীবনভর অন্ধের মতো মুখস্থ সূরা পড়ে গেলেন। অথচ সূরা ফাতিহা আমরা প্রতিনিয়ত নামাজে পড়ে থাকি। কখনো কি এই সূরার ভাবার্থ মর্মকথা বুঝতে চেষ্টা করছেন? কি সেই সহজ-সরল পথ এবং কারা সেই পথের আলোক দিশারি কান্ডারী এবং কারা গজবে পতিত এবং পথভ্রষ্ট হয়েছে? নিজের মনটাকে কিছু সময়ের জন্য নিরপেক্ষ এবং সহজ-সরল করুন, তাহলে বুঝতে পারবেন।

যুগে যুগে মহান আল্লাহ তায়ালা পথভোলা মানুষকে হেদায়েত করার জন্য এক লক্ষ চব্বিশ হাজার নবী-রাসূল প্রেরণ করছেন এবং নবুয়াতের শেষে আল্লাহর মনোনীত অসংখ্য অলী আল্লাহ প্রেরণ করছেন এবং কেয়ামত পর্যন্ত এই ধারা বলবৎ থাকবে। নবী-রাসূল এবং অলী আল্লাহদের পথটি হলো সিরাতুল মুস্তাকীম অর্থাৎ সহজ সরল পথ। আর নবী-রাসূল এবং অলী আল্লাহগণই হলো সেই সহজ-সরল পথের আলোক দিশারি কান্ডারি, যাদেরকে আল্লাহ পরিপূর্ণ নেয়ামত দান করছেন। আল্লাহর নেয়ামতের ফলে তাঁদের দ্বারা অসংখ্য অলৌকিক কারামত সংঘটিত হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। বিপরীতে যারাই নবী-রাসূল এবং অলী আল্লাহদের বিরোধিতা করছে, তারাই আল্লাহর গজেব পতিত এবং পথভ্রষ্ট হয়েছে।

মুসা (আঃ) নবীর আমলে ছিলো ফেরাউন, ইব্রাহিম (আঃ) নবীর আমলে ছিলো নমরুদ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর আমলে ছিলো আবু জেহেল, আবু লাহাব ও আবু সুফিয়ান প্রমুখ। আর আল্লাহর মনোনীত মহামানব অলী আল্লাহদের যুগে আছে সমাজের পথভ্রষ্ট আলেম সম্প্রদায়। যারা নিজেদের চরিত্র হারিয়ে প্রতিনিয়ত অপমানিত এবং লাঞ্চিত হচ্ছে। বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) কে তৎকালীন যুগের ৯০০শত বিখ্যাত আলেম ৭০বার মহাসমাবেশ করে কাফের ফতোয়া দিয়েছিলো।

আল্লাহর মনোনীত মহামানবগণের বিরোধিতা করতো ঐ সমাজের আলেম সম্প্রদায়। এই জন্যই সাধারণ মানুষ তাদের প্ররোচনায় প্রলোভিত হয়ে সিরাতুল মুস্তাকীম পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে বক্রপথে ধাবিত হয়েছে। এই জন্যই নুহ (আঃ) নবী ৮০০ বছর হেদায়েত করে মাত্র ৮০ জন ভক্ত পেয়েছিলো। এই ধারা এখনো চলমান রয়েছে। যার ফলে আল্লাহর মনোনীত মহামানবদের অনুসারী সংখ্যা সবসময় কম ছিলো এবং এখনো রয়েছে। এবার একটু ভেবে বলুন তো ভাই, আপনি কি সেই সিরাতুল মুস্তাকীম পথে আছেন নাকি বক্রপথে আছেন।

এই জন্যই সূরা ফাতিহাকে পবিত্র কুরআন শরীফের মা বলা হয় এবং সূরা ফাতিহা না পড়লে নামাজ আদায় হয় না। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো আমরা নামাজে বলি সহজ সরল পথ দেখাও আর নামাজ শেষ করেই সেই সহজ-সরল পথের কান্ডারি আল্লাহর মনোনীত অলী আল্লাহদের বিরোধিতা করে থাকি।

নিবেদক : অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।