
সৌদি আরবে যে কারণে মাজার নেই।
“যে আল্লাহর নিদর্শনসমূহকে সম্মান করে, নিঃসন্দেহে তা অন্তরের তাকওয়ারই বহিঃপ্রকাশ।” (সূরা আল-হাজ্জ: ২২)
আপনি হজ্জ-ওমরাহ করতে যেয়ে জান্নাতুল বাকী বা জান্নাতুল মুয়াল্লায় জিয়ারত করতে যেয়ে দেখলেন, কোন পাকা-গম্বুজ বিশিষ্ট মাজার নেই। সাথে সাথে আপনার মাথায় আসবে, দেশে কত অখ্যাত-বিখ্যাত মানুষের পাকা-গম্বুজ বিশিষ্ট মাজার কিন্তু এখানে প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলেহী ওয়া সাল্লামের এত কাছের ব্যক্তিরা শুয়ে রয়েছেন, তাঁদের পাকা-গম্বুজ বিশিষ্ট মাজার নেই কেন? আবার এদেশের একদল বলবে, সৌদিতে মাজার নেই অতএব এদেশে পাকা-গম্বুজ বিশিষ্ট মাজার থাকবে কেন? এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে আপনাকে ইতিহাস জানতে হবে। জানতে হবে, ওহাবীদের হাতে জান্নাতুল বাকীসহ সৌদির অন্য মাজার-মসজিদসমূহ ধ্বংস-অবমাননার ইতিহাস।
শত শত বছর থেকেই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সৌদি আরবেও প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলেহী ওয়া সাল্লামের প্রিয় ব্যক্তিদের পাকা-গম্বুজ বিশিষ্ট মাজার ছিলো কিন্তু সেগুলো দুই দফায় ধ্বংস করা হয়। ১২২০ হিজরীতে আলে সাউদ জান্নাতুল বাকী ধ্বংস করে। এ ঘটনার পর যখন তুরস্কের ওসমানীদের হাতে তাদের পতন হয়, তখন মুসলমানরা পূর্বের চেয়ে আরও ভালভাবে মাজারসমূহ নির্মাণ করেন। তারপরে আবার ১৩৪৪ হিজরীর ৮ শাওয়াল “কবর জিয়ারত শেরক এবং মুসলিম মিল্লাত থেকে বের হয়ে যাওয়ার কারণ” ঘোষণা দিয়ে আব্দুল আজীজ আলে সাউদ জান্নাতুল বাকীর মাযারসমূহ ধ্বংস করে।

ওহাবীদের হাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ মাজারসমূহের মধ্যে ইমাম হাসান আ., ইমাম জয়নুল আবেদীন আ., ইমাম বাকের আ., ইমাম জাফর সাদেক আ., ফাতেমা বিনতে আসাদ আ., আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালেব রা., ইবরাহীম বিন রাসূল সা., রাসূল সা.-এর স্ত্রী-কণ্যাগণ, ইসমাইল বিন ইমাম সাদেক, উসমান বিন মাযউন, হালিমা সাদিয়া, উম্মুল বানিন উল্লেখযোগ্য।
সুপ্রিয় পাঠক, আপনার সন্তানসহ বর্তমান প্রজন্মের কাছে ওহাবীদের দ্বারা সৌদির মাজারসমূহের ধ্বংসের এই ইতিহাস তুলে ধরুন নইলে যারা বলে সৌদিতে কোন পাকা মাজার নেই তাদের দ্বারা তারা প্রতারিত হবেন।
আমরা ওহাবী আলে সাউদের এ অপকর্মের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সাথে সাথে এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি যে, অচিরেই জান্নাতুল বাকীর মাজার সমূহের পুন:নির্মান করা হবে এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের লাখো জিয়ারতকারীকে সেখানে দেখতে পাওয়া যাবে।
লেখা: আবু সালেহ