ভগবান এক ও অদ্বিতীয়
“মানুষ থুয়ে খোদা ভজো- এই মন্ত্রণা কে দিয়েছে? মানুষ ভজো, কোরান খুঁজো। পাতায় পাতায় সাক্ষী আছে।” (জালাল উদ্দিন খাঁ)
“অর্জুন ভগবান কৃষ্ণকে বলেছিলেন, তুমি ভগবান কি এক? নাকি বহু? তুমি যদি এক হইয়া থাকো তাহলে এতগুলো দেবতার পুজা কেন করি?
উত্তরে ভগবান বলিলেন, একই সুতায় গাঁথা ফুলের মালা-তুমি যে কোন একটি ফুলকে পুজা দেওনা কেন সে পুজা আমিই পেয়ে থাকি; (মালাটিই আমি নিজেই) আমি ভগবান এক, অদ্বিতীয়।” [গীতা/আঠার অধ্যায়।]
এখন অনেক ধর্মান্ধ নামে মুসলিম বন্ধুরা বলতে পারেন যে- (গীতার কোন বেইল নাই। এগুলা যুগে যুগে পরিবর্তন হয়। এটা আসল নয়; নকল)।
তাহলে শুনুন: এই অভিযোগটা আমাদের ইসলাম ধর্মেও আছে! পৃথিবীর প্রায় ১৫ কোটি মুসলীমরা মনে করে কোরানটা আসল কোরান না! কাটছাঁট করা হইছে! ইরাক, ইরান, সিরিয়া, মিশর, বাহরাইন এবং কাজাকিস্তান এর ৬০% মুসলিমদের কোরান আলাদা! তাদের কোরানের সাথে আমাদের কোরানের মিল নাই!
এইবার আরেকটু মজার তথ্য দেই?
শুনুন: হিন্দুদের অনেক ভগবান নাই; তারা এক ঈশ্বরের পুজা করে। আমরা “লা ইলাহ ইল্লাল্লাহ” বলি, তারা “একমেবাদ্বিতীয়ম” বলে!
হিন্দুরা নিরাকার আল্লাহকে ফেইক সাকার করে উপাসনা করে। আমাদের আল্লাহকেও কিন্তু দেখা যাবে- আল্লাহ নিজেই বলেছেন। যাই হোক, সে কথা না হয় বাদই দিলাম। হিন্দুরা পূনর্জনম বিশ্বাস করে; আমরা পরজনম বিশ্বাস করি। যা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ!
মজার ব্যাপার হইলঃ প্রায় ৫০% মুসলিমরা সরাসরি পুনর্জনমে বিশ্বাসী! এখন আসল কথা শুনুন: “জাত-পাত-ধর্ম-কর্ম যার যার, আত্মদর্শন সবার।” সৃষ্টিকর্তার লীলা বুঝা ভীষণ দায়।
তাইতো কবি নজরুল বলেছিলেন:-
“শুণ্যে মহা আকাশে
তুমি মগ্ন লীলা বিলাসে
ভাঙ্গিছো গড়িছো নীতি ক্ষণে ক্ষণে
নির্জনে প্রভু নির্জনে খেলিছো ”
উগ্রপন্থীরা আবার এটাও বলতে পারে যে- গীতা থেকে কথা বলার কি দরকার ছিলো? মুসলিম হয়ে হিন্দুদের জন্য কিসের এত দরদ, নজরুলের জন্য কেনো এত পিরিতি ইত্যাদি ইত্যাদি।
তাদের কে আমি বলতে চাই: আমি মানুষ, সাম্যবাদী, মানবতাবাদী। আমার কাছে “মানুষ” ই সত্য। আমার ধর্ম “মানুষ ধর্ম।”
লেখা: শহিদুল শাহ্